শনিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৮

বাচ্চার যদি ঘুম না আসে, রাতে জেগে থাকে তাহলে করনীয়


v বালিশের নিচে বা ভেতরে এ আয়াতটি কাগজে  লিখে রাখুন
یَسْئَلُونَکَ عَنِ الْجِبالِ فَقُلْ یَنْسِفُها رَبّی نَسْفاً فَیَذَرْها قاعاً صَفْصَفاً لَّا تَرَىٰ فِيهَا عِوَجًا وَلَا أَمْتًا
 সুরা ত্বাহা ১০৫- ১০৭

v এরপর বলুন
لا حَوْلَ وَ لا قُوَّهَ اِلاّ بِاللهُ الْعَلِیَّ الْعظیمِ

v ঘুমানোর আগে কোরআন তিলাওয়াত শুনান, ঘুম পাড়ানি ইসলামি গান শুনান, ইসলামি  কিসসা কাহিনী শুনান

v যয়তুনের তেল বা অন্য কোনো তেল দিয়ে (বা তেল ছাড়া) হাত পা ম্যাসাজ করে দিন

v সুগন্ধি ব্যবহার করুন

v স্ট্রেস মুক্ত আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করুন

স্বাস্থ্য ও শিফা ( রোগ আরোগ্য ও নিরাময় ) সংক্রান্ত কয়েকটি হাদীস - ১



চার খাসলাত ( বৈশিষ্ট ও স্বভাব ) অর্জিত হলে মানুষকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় না


عن الأصبغ بن نباتة قال : قال أمير المؤمنين عليّ بن أبي طالب ( ع ) للحسن ابنه : يا بنيّ ألا أُعلِّمُکَ أربَعَ خِصالٍ تَستَغنِي بِها عَنِ الطِّبِّ ؟ فَقالَ : بَلَی يَا أَمِيرَ المُؤمِنِينَ ، قَالَ : لَا تَجلِس عَلَی الطَّعَامِ وَ أَنتَ جَائِعً ، لَا تَقُم عَنِ الطَّعَامِ إِلَّا وَ أَنتَ تَشتَهِي ، وَ جَوِّدِ المَضغَ ، وَ إِذَا نُمتَ فَاعرِض نَفسَکَ عَلَی الخَلَاءِ ، فَإِذَا استَعمَلتَ هذَا استَغنَيتَ عَنِ الطِّبِّ .

আসবাঘ ইবন-ই নুবাতাহ থেকে বর্ণিতঃ ইমাম আমীরুল মুমিনীন আলী ইবন-ই আবী তালিব (আঃ) ইমাম হাসানকে (আঃ) বললেনঃ হে বৎস্য, তোমাকে কি আমি চার খাসলাতের(বৈশিষ্ট ও স্বভাব)শিক্ষা দেব যারফলে তুমি চিকিৎসার মুখাপেক্ষী হবে না.... তখন ইমাম হাসান(আঃ)বললেনঃ জী, হ্যাঁ। তখন আলী(আঃ) তাকে বললেনঃ ক্ষুধার্ত না হয়ে খাবার খেতে বসো না(ক্ষুধার্ত না হওয়া পর্যন্ত আহার করো না) , খাবার খাওয়ার ইচ্ছা থাকাবস্থায় অর্থাৎ পরিতৃপ্ত না হয়ে এবং ক্ষুধা থাকাবস্থায় খাওয়া শেষ করো , খাবার ভালোভাবে চাবাবে , ঘুমাতে যাওয়ার আগে (সময় এবং ঘুম থেকে উঠে)  টয়লেটে গিয়ে মলমূত্র ত্যাগ করে নিজেকে খালি ও পরিষ্কার করো।

 --সূত্রঃ আল-খিসালপৃঃ২৫৭হাদীস নংঃ৬৭ , ওয়াসাইলুশ শিয়াখঃ২৪পৃঃ২৪৫হাদীস নংঃ৮


অতিভোজন ( খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রে অপব্যয় অর্থাৎ ইসরাফ )


ইমাম আলী(আঃ)বলেনঃ অতিভোজন করা থেকে বিরত থাক।কারণ যে অতিভোজন করে তার রোগ-ব্যাধি বেশি হয়ে থাকে(অর্থাৎ বেশি বেশি রোগাক্রান্ত ও অসুস্থ হয়)এবং তার সুনিদ্রা হয় না (অর্খাৎ সে ভয়ানক দুঃস্বপ্ন দেখে)। (দ্রঃ গুরারুল হিকাম )

إِيَّاکَ وَ البِطنَةَ ، فَمَن لَزِمَهَا کَثُرَت أَسقَامُهُ ، فَسَدَت أَحلَامُهُ



অন্যত্র তিনি বলেছেনঃ অতিভোজন থেকে বিরত থাক। কারণ তা অন্তঃকরনকে পাষা করে, নামাজ পড়ার ক্ষেত্র আলস্য আনয়ন করে এবং দেহকে  নষ্ট করে দেয় ( দৈহিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়)।
إِيَّکُم و البِطنَةَ ، فَإِنَّهَا مِقسَاةٌ لِلقَلبِ مِکسَلَةٌ عَنِ الصَّلَاةِ ، مَفسَدَةٌ لِلجَسَد



হযরত আলী (আঃ) বলেনঃ অতিভোজন বুদ্ধিমত্তাকে বাধাগ্রস্ত করে বা বিঘ্ন ঘটায় ( অর্থাৎ বুদ্ধিমত্তার বিলোপ সাধন করে)।
البِطنَةُ تَمنَعُ الفِطنَةُ



হযরত আলী(আঃ) বলেনঃ অতিভোজন(উদরপূর্তি করে খাওয়া) ধর্মভীরুতা ও তাকওয়া-পরহেজগারীকে নষ্ট করে দেয়।
الشَّبَعُ يُفسِدُ الوَرَعَ



হয়রত আলী(আঃ) বলেনঃ উদর মুবাহ(বৈধ হালাল)খাদ্য দিয়ে ভর্তি হয়ে গেলে (অর্থাৎ অতিভোজন ও ভুড়িভোজন করলে)অন্তঃকরন(অন্তর)অন্ধ হয়ে কল্যাণ ও মঙ্গলকে শনাক্ত ও চিহ্নিত করতে পারে না।
إِذَا مُلِيَ البَطنُ مِنَ المُبَاحِ عَمِيَ القَلبُ عَنِ الصَّلَاحِ




হযরত আলী (আঃ) বলেনঃ  তাকওয়া-পরহেজগারীর নিকৃষ্ট সংগি হচ্ছে অতিভোজন ও পেটুকতা।
بِئسَ  قَرِينُ الوَرَعِ الشَّبَعُ





হযরত আলী(আঃ)বলেনঃ সবসময় অতিভোজন করা অর্থাৎ অতিভোজনের অভ্যাস  বিভিন্ন ধরনের বেদনাদায়ক রোগ ব্যাধির কারণ।
إِدمَانُ الشَّبَعِ يُورِثُ أُنواعَ الوَجَعُ




হযরত আলী (আঃ) বলেনঃ অতিভোজন ( উদরপূর্তি) এবং ফরজ ওয়াজিব বিধান পালন  এক জায়গা একত্রিত হয় না ( অর্থাৎ একসংগে সম্ভব নয়)।
لَايَجتَمِعُ الشَّبَعُ وَ القِيَامُ بِالمُفتَرَضِ




হযরত আলী(আঃ) বলেনঃ অতিভোজন(উদরপূর্তি করে আহার)হচ্ছে পাপাচারের
 উত্তম সহায়তাকারী ও সহযোগী।
نِعمَ عَونُ المَعَاصِي الشَّبَعُ




হযরত আলী (আঃ) বলেনঃ   তোমরা অতিভোজনের অভ্যাস পরিহার করবে। কারণ তা রোগ ব্যাধির কারণ এবং রোগ ব্যাধির তীব্রতা বৃদ্ধি করে।
إِيَّاکَ وَ إِدمَانَ الشَّبَعِ ، فَإِنَّهُ يَهِيجُ الأَسقَامَ وَ يُثِيرُ العِلَلَ





দ্রঃ মুহাম্মাদ দাশতী প্রণীত ইমাম আলী (আঃ) এবং স্বাস্থ্য ও আরোগ্য

সংকলন এবং অনুবাদঃ মোঃ মুনীর হোসেন খান




তিব্ব্ -ই ইসলামীতে তোরোবের (মূলা) ঔষধি-ভেষজীয় এবং রোগারোগ্যকারী গুণাবলী



রেওয়াতসমুহে মূলাকে ফাজল (فجل ) বলা হয়েছে।

মূলা বালগাম দূর করে,মূলার কাণ্ড খাদ্য হজম ও পরিপাক করতে সাহায্য করে এবং মূলা পাতা ( মূলা শাখ ) মূত্র বর্ধক অর্থাৎ diuretic.

মূলা দুই প্রকার, ১. গ্রীষ্মকালীন মূলা ( তোরোবচেহ বা  গোলাকৃতির ছোট লাল মূলা) এবং শীতকালীন মূলা (  গোলাকৃতির কালো মূলা )

জামে ইমাম রেযা ( আঃ ) গ্রন্থে উল্লেখিত হয়েছে কিডনির পাথর বের করার জন্য  গমের একটি দানা সমেত মূলার রস পান করা উপকারী।

মূলা তবিয়ত বা প্রকৃতি হচ্ছে  গরম ( উষ্ণ ) এবং শুষ্ক ।মূলার বীজ মূলা বা মূলার কাণ্ড ও পাতার চেয়ে বেশি উষ্ণ ও শুষ্ক ।

মূলা পেট ফাঁপায়, ঢেকুর উদ্রক করে কিন্তু মূলার বীজ পেট ফাঁপানো ভালো করে।

মূলার তেলের কয়েক ফোঁটা কানে ঢাললে কানের  বাতাস দূর করে।

মূলার পাতার রস চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে।

মূলার পাতা ফুটন্ত পানিতে দম করে সেই পানি খেলে তৃষ্ণা দূর হয় এবং ক্রনিক কাঁশি ভালো হয়।

মূলার রস খওয়া খাদ্য হজমের জন্য উপকারী ।

মূলার রস যকৃত এবং প্লীহার অবস্ট্রাকশন ( Obstruction ) নিরাময়ে উপকারী।

মূলার রস জন্ডিস এবং পাণ্ডুর রোগ নিরাময়ে উপকারী।

মূলা বীজ  ক্ষুধাবর্ধক ও রুচিকরএবং যকৃতের ব্যাথা উপশম করে।

খাওয়ার পর দু গ্র্যাম মূলা বীজ খেলে তা খাবার হজমে সাহায্য করে।

মূলা বীজ এবং এর কাণ্ড খেলে তা অস্থিসন্ধির ব্যাথা এবং সায়াটিক ব্যাথা উপশম করার জন্য উপকারী।

মূলা - মধুর  প্রলেপ ও পট্টি ক্রনিক ক্ষত ভালো করার জন্য উপকারী।

মূলার রস সেবন বা পান  মূত্র নালিকে উন্মুক্ত করা অর্থাৎ খোলার জন্য উপকারী।

১০০ গ্র্যাম মূলা পাতা ও শাখার রস লাল চিনির সাথে পান করলে যার্দাব ( زرداب ) অর্থাৎ পিত্ত ( bile )  এবং শরীরের বাড়তি পানি বের করে দেয় ।

মূলার ভিতর খালি করে তা শালগম বীজ দিয়ে পূর্ণ করে এবং এর মাথা শালগমের টুকরো  দিয়ে আটকিয়ে সেটাকে পিসে আগুণে পোড়ানোর পর মধু দিয়ে খেলে তা মূত্রনালির পাথর বের করার ক্ষেত্রে উপকারী।

মূলা বীজ খাওয়া মূত্রবর্ধক অর্থাৎ ডাই ইউরেটিক।

মূলা বীজ খাওয়া বমির উদ্রেক করে।

মূলাবীজ এবং সিরকার প্রলেপ বা পট্টি দংশনকারী প্রাণীর বিষ বের করার ক্ষেত্রে উপকারী।

মূলার রস শরীরে মাখালে পোকা-মাকড় দূর হয় ।

মূলা খেলে মুখমণ্ডলের রং উজ্জ্বল হয়।

গমের আটার সাথে  সিদ্ধ মূলার  প্রলেপ মাথায় মাখলে তা চুল গজানো এবং চুল পড়া বন্ধ করার জন্য উপকারী ।


  ইসলামী সংস্কৃতি ও  জীবনধারা 




শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৮

আব-ই নেইসান অর্থাৎ নেইসান মাসের বৃষ্টির পানি


নেইসান হচ্ছে অষ্টম রোমীয় মাস যা ২৩ শে ফার্ভার্দীন ( ১২ এপ্রিল ) থেকে শুরু হয়। এ মাস ৩০ দিনের।কিছু হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে,এ মাসে যে বৃষ্টি হয় তার বেশ কিছু উপকারী বৈশিষ্ট ( খাওয়াস ) রয়েছে।যদি কেউ কোন পরিস্কার পাত্রে এ মাসের বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে এর উপর নিম্নোক্ত সূরা ও দুআসমুহ পড়বে এবং যে কেউ এই পড়া পানি পান করবে সে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ও আখলাকী (চারিত্রিক-নৈতিক) রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি পাবে।আর রেওয়ায়তসমুহে এর ফযীলত ও বরকত এতটা বর্ণিত হয়েছে যে তা সত্যি মানুষকে বিস্ময়াভিভূত করে ( যাদুল মাআদ,পৃঃ৫৩২-৫৩৪)।

সূরা ও দুআসমুহ হচ্ছেঃ ১.সূরা-ই হামদ,২.আয়াতুল কুর্সী,৩.কুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরূন,৪.সাব্বিহাসমা রব্বিকাল আলা,৫.কুল আঊযু বিরব্বিল ফালাক,৬.কুল আঊযু বিরব্বিন্নাস,৭.কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ - এ সব সূরার প্রতিটি ৭০ বার পড়তে হবে ( যাদুল মাআদ,পৃঃ৫৩৪ )।

ঠিক একই ভাবে নিম্নোক্ত যিকরসমুহঃ১.লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ ২. আল্লাহু আকবার ৩.আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলি মুহাম্মাদ ৪.সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার – এ সব দুআর প্রতিটি ৭০ বার পড়তে হবে(যাদুল মাআদ,পৃঃ৫৩৪)।

মরহুম আল্লামা মাজলিসী বলেনঃ সার্বিক ভাবে বৃষ্টির পানি হচ্ছে মুবারক( বরকতময় ) এবং উপকারী।হযরত আমীরুল মুমিনীন আলী(আঃ)এর একটি হাদীসে বর্ণিত আছেঃ যে পানি আসমান থেকে বর্ষিত হয় তা তোমরা পান করো।কারণ তা শরীরকে পরিস্কার ও পবিত্র করে এবং ব্যাথা-বেদনার উপশম করে।
পবিত্র কোরানে এরশাদ হচ্ছেঃ

وَ يُنَزِّلُ عَلَيکُم مِنَ السَّمَاءِ مَاءً لِيُطَهِّرَکُم بِهِ وَ يُذهِبَ عَنکَم رِجزَ الشَّيطَانِ وَ لِيَربِطَ عَلَی قُلُوبِکُم وَ يُثَبِّتَ بِهِ الأَقدَامَ

আল্লাহ পাক আসমান থেকে তোমাদের উপর বারি(বৃষ্টি) বর্ষণ করেন সেই বৃষ্টির পানি দিয়ে তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্য , তোমাদের থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণা অপসারণের জন্য , তোমাদের হৃদয় দৃঢ় করার জন্য এবং (তোমাদের) পা স্থির রাখার জন্য। ( সূরা-ই আনফাল,আয়াতঃ১১)

আল্লামা মাজলিসী বলেনঃ আব-ই নেইসান সংক্রান্ত আমলের ক্ষেত্রে অধিকতর উত্তম পন্থা হচ্ছে  যদি সমবেতভাবে কয়েকজন ব্যক্তি এসব সূরা ও দুআ পড়ে তাহলে উক্ত সূরা ও দুআসমুহকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে প্রত্যেক ব্যক্তি তার ভাগে যে কয়টি সূরা ও দুআ পড়বে সেগুলোর প্রতিটি  ৭০ বার পাঠ করবে।তবে এর চেয়েও উত্তম হচ্ছেঃপ্রত্যেক ব্যক্তি ঐ সব সূরা ও দুআর প্রতিটি ৭০ বার পাঠ করবে ( যাদুল মাআদ,পৃঃ৫৩৪,৫৩৫)।

n  ইসলামী সংস্কৃতি ও  জীবনধারা 

খেজুর ( تمر ) এর গুন সংক্রান্ত কিছু হাদিস.

ইমাম সাদিক ( আঃ ) নিজ পিতৃপুরুষদের মাধ্যমে ইমাম আলী ( আঃ ) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ ما تأکُلُ الحامِلُ مِن شيءٍ و لا ...